প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ ও সমর্থন করা লাখো মানুষকে ‘সন্ত্রাসী’ এবং ‘ইসলামপন্থি চরমপন্থি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এতে কার্যত তিনি বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষকেই ‘চরমপন্থি’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম তার পোস্টে উল্লেখ করেন, “১৯৭৩ সালে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান ‘৬৫ মিলিয়ন কলাবরেটরস’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সেই লেখায় তিনি তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন, কীভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে ‘সহযোগী’ বা ‘দালাল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। ৫০ বছর পর ইতিহাস যেন ভয়াবহভাবে পুনরাবৃত্ত হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা ভারতের জি নিউজের আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম ডব্লিউআইওএন-এ সাক্ষাৎকার দিয়ে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ ও সমর্থন করা লাখো মানুষকে ‘সন্ত্রাসী’ এবং ‘ইসলামপন্থি চরমপন্থি’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। অর্থাৎ কার্যত তিনি প্রায় সমগ্র জাতিকেই চরমপন্থি বলে চিহ্নিত করছেন।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও লেখেন, “ভাবা যায়, কতটা ঔদ্ধত্যের প্রয়োজন এমন মন্তব্য করার জন্য! এমন এক নেতা, যার সরকারের নৃশংসতা জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে নথিভুক্ত—তিনি এখন নিজ জাতিকেই ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিযুক্ত করছেন। এটা শুধু ভণ্ডামিই নয়, ক্ষমতার রোগাগ্রস্ত ঔদ্ধত্য।”
তিনি আরও বলেন, “এ যেন চূড়ান্ত পরিহাস। যে হাত সাধারণ নাগরিক, সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের রক্তে রঞ্জিত, সেই হাতই আজ পুরো জাতির দিকে কাঁপা আঙুল তুলে দোষারোপ করছে।”
তার পোস্টের শেষে শফিকুল আলম লিখেছেন, “দুঃখিত, ‘গুম রানি’—বাংলাদেশের মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত নয়। তারা ভুলবে না জুলাই হত্যাযজ্ঞ, ভুলবে না ‘বঙ্গের কসাই’-এর নির্দেশে সংঘটিত গণহত্যা। আর কখনো ক্ষমা করবে না সেই হত্যার নায়কদের।”
