দেশের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে: বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

দেশজুড়ে ভূমিকম্পের কার্যক্রম উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য বলছে, বছরে দেশে ভূমিকম্পের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন-বাংলাদেশের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল আরও শক্তি সঞ্চয় করছে, যা বড় ধরনের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।

তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ও আশপাশের এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। ২০২৩ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১-এ। আর ২০২৪ সালে তা আরও বাড়িয়ে ৫৪-এ পৌঁছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ৪ দফা কম্পন এই শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার বলেন, “সাম্প্রতিক কম্পনগুলো স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে-দেশের ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা আরও শক্তি সঞ্চয় করছে। তাই এখনই পরিকল্পিত প্রস্তুতির বিকল্প নেই।”

তিনি জানান, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় কাজ করা জরুরি। বাড়িঘরকে নিরাপদ রাখা, জরুরি সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে আচরণ করতে হবে-এসব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করাও অত্যন্ত প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ভূমিকম্পের সময় কোথায়, কখন বিপর্যয় ঘটবে তা আগে থেকে নির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও প্রস্তুতির অভাব বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ায়। তাঁদের মতে, নিয়মিত মহড়া, প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অভিযান পরিচালনা করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

এদিকে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় নড়েচড়ে বসেছে সরকারও।

আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম জানান, বড় কোনো ভূমিকম্পের পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রের বর্তমান সক্ষমতা, প্রস্তুতি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

দেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোকেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বিশেষজ্ঞরা আহ্বান জানিয়েছেন।

Read Previous

ওজন কমাতে খালি পেটে দারুচিনি-উপকার না ক্ষতি?

Read Next

বাংলাদেশের আইন সাংবাদিকবান্ধব নয়: অ্যাটর্নি জেনারেল

Most Popular