টি-টোয়েন্টি সিরিজ : আইরিশদের বিপক্ষে জয়ে সিরিজে সমতা আনলো টাইগাররা

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। ১৯তম ওভারে সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ছক্কা-চারে ১৩ রান তোলে বাংলাদেশ। ফলে শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ রানে। ২ বল হাতে রেখেই জয়ের সেই সমীকরণ মিলিয়েছে বাংলাদেশ। ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল স্বাগতিকরা।

একটা সময় মনে হচ্ছিল, সহজেই জিতে যাবে বাংলাদেশ। সেখান থেকে শেষদিকে এসে জমে উঠে ম্যাচ। এমনকি হারের শঙ্কাও পেয়ে বসেছিল বাংলাদেশকে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দারুণ ব্যাটিংয়ে সেই শঙ্কা দূর করে দিলেন। শেষ ওভারে দারুণ এক জয় পেলো লিটন দাসের দল।

চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ৪ উইকেট আর ২ বল হাতে রেখে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে টাইগাররা।

প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৭০ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। জবাবে ১৯.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৪ করে বাংলাদেশ।

১৭১ রানের লক্ষ্যে উড়ন্ত সূচনা করেন পারভেজ হোসেন ইমন। কিন্তু তার সঙ্গী তানজিদ তামিমকে ফিরতে হয়েছে হতাশা নিয়ে। ১৬ বলে ২৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ইমনের সঙ্গে তামিমের ভুল বোঝাবুঝিতে। ১০ বলে ৭ করে বোলার ম্যাকার্থির সরাসরি থ্রোতে ফেরেন তামিম।

তবে তামিমকে হারালেও ইমন আর লিটন দাসের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ঝড় তুলেছে বাংলাদেশ। ৬ ওভারে টাইগাররা তোলে ১ উইকেটে ৬৬ রান।

ইমন খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। তার সেই আত্মবিশ্বাসী ইনিংসের ইতি ঘটে ডেলানির বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গেলে। ২৮ বলে ৫ চার আর ২ ছক্কায় ৪৩ করেন ইমন।

ছক্কা মেরে ফিফটি পূরণ করেন লিটন, ৩৪ বলে। ইনিংসের ১৫তম ওভারে মার্ক এডায়ারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় তাকে। বাংলাদেশ অধিনায়কের ৩৭ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ছিল ৩টি করে চার-ছক্কার মার।

পরের ওভারে আরও এক উইকেট। এবার ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট সাইফ হাসান (১৭ বলে ২২)। চার বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

এরপর রানআউট হন তাওহিদ হৃদয় (৯ বলে ৬)। ৭ বলে ৫ করে বোল্ড হন নুরুল হাসান সোহান। ৬ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল সেই সময়।

সেখান থেকে সাইফউদ্দিনের ব্যাটে জয়। ৭ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফউদ্দিন। ৩ বলে একটি ছক্কা হাঁকান শেখ মেহেদি। ওই ছক্কাতেই শেষ হয় ম্যাচ।

এর আগে, ৬ উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আয়ারল্যান্ড। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেনেন্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দুই প্রান্ত থেকে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক লিটন দাস। তবে বাজিমাত হয়নি। শেখ মেহেদী আর নাসুম আহমেদের প্রথম দুই ওভার থেকে ২৭ রান তুলে নেয় আইরিশরা।

তৃতীয় ওভারে এক বল হওয়ার পর ফ্লাডলাইড বিভ্রাটে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ১২ মিনিট। প্রায় অন্ধকার হয়ে যায় পুরো মাঠ। দুই দলের ক্রিকেটাররাই তাদের ড্রেসিংরুমে ফিরে যান।

বিরতির পর খেলা শুরু হলে ফের ঝড় চালিয়ে যায় আইরিশরা। ৪.১ ওভারে দলীয় সংগ্রহ ৫০ পূর্ণ করে তারা। পঞ্চম ওভারে তানজিম হাসান সাকিব প্রথম আঘাত হানেন। ১৪ বলে ২৯ করা স্টার্লিংকে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ বানান এই পেসার।

নবম ওভারে আরেক সেট ব্যাটার টিম টেক্টরকে ফেরান শেখ মেহেদি। ডাউন দ্য উইকেটে গেলে বলের লাইন মিস করে স্টাম্পিং হন টেক্টর (২৫ বলে ৩৮)।ওই ওভারে টেক্টরের আরেক ভাই হ্যারি টেক্টরকে (১১ বলে ১১) বোল্ড করেন মেহেদি।

নিজের শেষ ওভারে এই অফস্পিনারের তৃতীয় শিকার বেন কালিটজ (৯ বলে ৭)। ১১ ওভারে ১০৩ রানে ৪ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।

পঞ্চম উইকেটে ৪৪ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন লরকান টাকার আর জর্জ ডকরেল। শেষ পর্যন্ত এই জুটিটি ভাঙেন সাইফউদ্দিন। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন ডকরেল (২১ বলে ১৮)। ৩১ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন টাকার।

শেখ মেহেদি হাসান ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট।

Read Previous

সিরিজ বাঁচাতে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭১ রান

Read Next

আপাতত এভারকেয়ার হাসপাতালেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে : ডা. জাহিদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Most Popular