গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। তার শারীরিক অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। মেডিকেল বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরই তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পরিবার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে এসে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ।
তিনি বলেন, “হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। সকালে পুনরায় করা সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, তার মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি ছিল এবং সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে আছে।” তিনি আরও জানান, গুলি মস্তিষ্কের টেম্পোরাল ব্যারিয়ার ভেদ করে চলে গেছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ডা. আহাদ জানান, একপর্যায়ে হাদির কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা কিছুটা ফিরে এসেছে। বর্তমানে তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন এবং ফুসফুসের অবস্থায় তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তিনি বলেন, “খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালিগুলোর পাশ দিয়েই গুলি ভেদ করে গেছে, যা তার অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছে।”
হাদির বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে তিনি জানান, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের কয়েকটি হাসপাতালে কেস সামারি পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো বিষয়টি বিশ্লেষণ করছে। তারা সাড়া দিলে পরিবারের পক্ষ থেকে চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে-কোন দেশে এবং কোন হাসপাতালে তাকে নেওয়া হবে। তবে পুরো বিষয়টি পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে।
হাদির বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) এখনও তিন রয়েছে। অপারেশনের আগে, অপারেশনের সময় এবং বর্তমানে-সব সময়ই একই অবস্থায় আছে।”
এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে রয়ে যাওয়া বুলেটের কিছু অংশ বের করে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। ঘটনার পর থেকেই হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে রাজধানীজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এরই মধ্যে শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
