শীতের শুরুতেই পদ্মা ও মেঘনা নদীতে বেড়েছে পাঙাশের সরবরাহ, যা ইলিশের অনুপস্থিতিতেও জেলেদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। ইলিশের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ না ধরা পড়লেও বড় আকারের পাঙাশ ধরা পড়ছে জালে, ফলে ভোর থেকে মাওয়া মৎস্য আড়তসহ জেলার বিভিন্ন হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় বাড়ছে।
মাওয়া মৎস্য আড়তের সাবেক সভাপতি ছানা রজ্ঞন দাস জানান, প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাঙাশ বেশি ধরা পড়ে। এবারও জেলেরা নৌকা ভরে পাঙাশ আড়তে নিয়ে আসছে। মিরকাদিম মৎস্য আড়তের হাজী রুহুল আমিন বলেন, “এত বড় পাঙাশ আগে কখনো দেখিনি। এখন যেন পুরো মৌসুম চলে এসেছে।”
পাঙাশের প্রচুর সরবরাহে আড়ত ও বাজারে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ – ৮০০ টাকায়। পাইকাররা নিলাম-ডাকের মাধ্যমে অন্যান্য স্থানে পাঠাচ্ছেন। স্থানীয় ক্রেতারা বলছেন, শীতকালে পাঙাশের স্বাদ আরও উৎকৃষ্ট হয়।
জেলেরা জানাচ্ছেন, গত কয়েকদিনে প্রতিদিনই দুই থেকে তিনটি করে বড় পাঙাশ ধরা পড়ছে। সুমন হালদার বলেন, “আড়াই কেজি থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত পাঙাশ জালে উঠছে।” আব্বাস মিয়া যোগ করেন, “ইলিশ না থাকলেও প্রতিদিন সুস্বাদু পাঙাশ ধরা পড়ছে।”
নদী গবেষকেরা জানিয়েছেন, পানি কমে গেলে পাঙাশ নদীর মাঝপথে বেশি বিচরণ করে, ফলে জালে ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে তারা সতর্ক করছেন, ইলিশের অনুপস্থিতিতে পাঙাশের অতিরিক্ত শিকার নদীর পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, “২৫ অক্টোবর শেষ হওয়া ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের পর পাঙাশের সরবরাহ বেড়েছে। জেলেরা এতে ভালো আয় করছে।”
সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা শেখ রাসেল জানালেন, পাঙাশের বংশবিস্তার রক্ষা ও নিরাপদ আহরণের জন্য বড় খাঁচা ব্যবহারসহ রেনু নিধনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়া হয়েছে।
