দিনে কত কাপ চা নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
চা এখন অনেকেরই দৈনন্দিন অভ্যাস। কাজের ফাঁকে, ক্লান্তি দূর করতে বা আড্ডার টেবিলে-চা যেন জীবনের এক নিয়মিত সঙ্গী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভ্যাস যতই প্রিয় হোক, চা পানের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরে নানা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই প্রতিদিন কতটা চা খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত-তা জানা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক ২ থেকে ৩ কাপ চা (প্রায় ৪০০–৬০০ মিলিলিটার) পর্যন্ত পান করা সাধারণভাবে নিরাপদ। বিশেষ করে লাল চা-যেখানে অতিরিক্ত দুধ বা চিনি নেই-তা শরীরের জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি উপকারী।
চা-তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান (বিশেষত ব্ল্যাক টি ও গ্রিন টিতে) শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। অন্যদিকে হালকা ক্যাফেইন মানসিক ক্লান্তি কমায় ও সতর্কতা বাড়ায়।
পরিমিত চা পানের উপকারিতা
মস্তিষ্ক সজাগ রাখে: চায়ের ক্যাফেইন মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: শরীরের কোষে ক্ষতিকর প্রভাব কমায়।
হজমে সহায়তা: খাবার হজমে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: ব্ল্যাক টি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
অতিরিক্ত চা পানের ক্ষতিকর দিক
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দিনে ৪ কাপের বেশি চা পান করা শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
ঘুমের ব্যাঘাত
অম্বল ও গ্যাস্ট্রিকের ঝুঁকি বৃদ্ধি
শরীরে আয়রন শোষণে বাধা, ফলে রক্তস্বল্পতা
হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি বা উদ্বেগ
বিশেষ করে যারা নিয়মিত পেটের সমস্যা, অম্লতা বা অ্যানিমিয়ার সমস্যায় ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চা পান আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
চা পান করার সবচেয়ে ভালো সময় সকাল বা দুপুর। রাতে চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
চায়ের সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি বা দুধ না মেশানোই উত্তম।
হারবাল বা গ্রিন টি-তে ক্যাফেইন কম থাকায় দিনে ৩–৪ কাপ পর্যন্ত পান করা নিরাপদ বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
চা পানের অভ্যাসকে স্বাস্থ্যকর রাখতে পরিমিতি বজায় রাখা এবং সময়মতো পান করাই সঠিক উপায় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
