হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আগেই অনুভূত হচ্ছে শীতের তীব্রতা। সারাদেশে শীতের আগমনী বার্তা থাকলেও তেঁতুলিয়ায় রাতের তাপমাত্রা দ্রুত কমে গিয়ে কয়েক দিন ধরেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে এই সীমান্ত উপজেলা।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬১ শতাংশ। ফজর থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা কুয়াশা থাকলেও কিছুক্ষণ পরই দেখা মেলে রোদ। তবে সন্ধ্যার পর আবারও বাড়তে থাকে কুয়াশার ঘনত্ব।
একই দিন দুপুর ১২টার দিকে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দিনভর ১৬ থেকে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে তাপমাত্রা। আর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিকেল পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা।
তাদের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে তেঁতুলিয়ায়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
শীতজনিত রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালে
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় বড় পার্থক্য জনস্বাস্থ্যে ফেলছে উল্লেখযোগ্য প্রভাব। জেলা সদর ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে দ্রুত বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও শ্বাসকষ্টে ভোগা মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যায়।
চিকিৎসকদের মতে, দিনে গরম আর রাতে হঠাৎ ঠান্ডা-এই তাপমাত্রার অস্থিরতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে সংক্রমণজনিত রোগ দ্রুত বাড়ছে। তাই সবাইকে রাতের বেলায় গরম কাপড় পরিধান করা, শিশুর প্রতি বাড়তি যত্ন এবং সকালে কুয়াশা বেশি থাকলে বাইরে কম বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
স্থানীয়দের ভাষায়, তেঁতুলিয়ায় এখন “দিনে রোদে গরম, রাতে কাঁপুনি”-এই দুই রকম আবহাওয়া চলছে। বাজার-ঘাটে সকালবেলা মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও রোদ ওঠার পর বাড়ছে ভিড়। রাতে গরম কাপড় ছাড়া বাইরে চলাফেরা করাই দায় হয়ে উঠছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত মৌসুম শুরুর আগেই তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা দ্রুত কমছে। “বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রাতেই সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে,” বলেন তিনি।
ডিসেম্বরের শুরুতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
