গাজায় অক্টোবরের যুদ্ধবিরতির পর মানবিক সহায়তা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও সামগ্রিক চাহিদার তুলনায় তা এখনও গুরুতরভাবে অপ্রতুল রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। শীতকালীন বৃষ্টিতে বিতরণকৃত খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।
শুক্রবার সংস্থাটি জানায়, গাজার লাখ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা এখনো প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থার আগস্টের এক প্রতিবেদনে উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।
ডব্লিউএফপির জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র আবির ইত্তেফা বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ভারী বৃষ্টিতে বহু পরিবারের ঘরে মজুত রাখা খাদ্য ভেসে গেছে বা নষ্ট হয়েছে। শীত সামনে হওয়ায় এ পরিস্থিতি গাজার পরিবারগুলোর জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
দুই বছরের বিধ্বংসী যুদ্ধের পর চলতি বছরের ১০ অক্টোবর কার্যকর হয় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি। এরপর থেকে ডব্লিউএফপি গাজায় প্রায় ৪০ হাজার টন খাদ্য পাঠিয়েছে। তবে মাসের শুরুতে রসদের জটিলতা মোকাবিলা করতে গিয়ে সংস্থাটি তাদের পরিকল্পিত খাদ্য বিতরণের মাত্র ৩০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম হয়। ফলে লক্ষ্যমাত্রার ১৬ লাখ মানুষের মধ্যে খাদ্য সহায়তা পৌঁছায় কেবল ৫ লাখ ৩০ হাজার জনের কাছে।
ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হওয়ায় বিতরণ কার্যক্রম ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় বাজারগুলো আংশিকভাবে সচল হলেও খাদ্যের দাম এখনও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। আয়ের উৎস হারানো বহু ফিলিস্তিনির জন্য ২৫ ডলার মূল্যের একটি মুরগি কেনাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই অধিকাংশ পরিবারই এখনো মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
ডব্লিউএফপি জানায়, খান ইউনিসের এক নারী বলেছেন-তিনি সন্তানদের বাজারে নিয়ে যান না,কারণ বাজারে খাবার দেখলে তারা কিনতে চাইবে, যা তার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি বাজারের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ও তিনি সন্তানদের চোখ ঢেকে রাখেন।
