একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৪ বছর কারাভোগের পর খালাস পাওয়া এটিএম আজহারুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির হয়েছেন। তবে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ এবং কর্মপরিষদে পরিবর্তন আনা হয়নি।
দলটি নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা এবং অন্যান্য নায়েবে আমির, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, অন্যান্য বিভাগীয় সেক্রেটারিরা সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকবেন। শনিবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সমাপনী অধিবেশনে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর অন্তর জামায়াতের শুরা, নির্বাহী পরিষদ এবং কর্মপারিষদ গঠিত হয়।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহছানুল মাহবুব যোবায়ের সমকালকে বলেছেন, এবার মজলিসে শুরার সদস্য নির্বাচন হলেও, অন্যান্য কমিটিতে পরিবর্তন আনা হয়নি। সংসদ নির্বাচনের পর তা করা হবে।
রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে মজলিসে শুরার সমাপনী অধিবেশনে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করতে সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক কোরবানি করতে হবে। যে কোন অনাকাক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি
মজলিসে শুরায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে একই দিনে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত হলেও, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি সরকার। বরং একইদিনে গণভোট ও নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তি গণভোট। গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে হলে গণভোটের ফলাফল কি আগে ঘোষণা করা হবে? গণভোটে ‘না’ জয়ী হলে, সংসদ নির্বাচনের কি হবে? একটি বড় দলের কেউ কেউ ‘না’ ভোটের প্রচার চালাচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, জাপাসহ ১৪ দল, সিপিবিসহ কিছু কিছু বাম দল ‘না’ ভোটের পক্ষে। জামায়াত ‘হ্যাঁ’ ভোটকে বিজয়ী করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছে।
মজলিসে শুরায় বলা হয়, সম্প্রতি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালী সদর, জামালপুরের মেলান্দহ, ফেনী সদর, নওগাঁ সদর, লক্ষ্মীপুর সদর, নারায়গঞ্জের আড়াইহাজার, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, ঝিনাইদহের মহেশপুরসহ বিভিন্নস্থানে জামায়াত নেতাকর্মীদের উপর বিএনপির সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। জামায়াতের নারীদের কর্মীদের পর্যন্ত দাওয়াতি কাজেও বাধা দিচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি।
৮ দলের সমাবেশ আজ থেকে
জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিশ্চিতে গণভোটে হ্যাঁ এর পক্ষে প্রচারসহ ৫ দাবিতে আজ রোববার রাজশাহীতে কর্মসূচির মাধ্যমে শুরু হচ্ছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ। এতে ৮ দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন। আগামীকাল সোমবার খুলনায় সমাবেশ হবে। আগামী ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হবে। ৮ দলের সমন্বয়ক ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ সমকালকে বলেছেন, লাখো মানুষের জমায়েত হবে এসব সমাবেশে।
