বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যারা বিকৃত করার চেষ্টা করবে, দেশের জনগণ তাদের কোনোভাবেই ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওয়ারীতে জিয়া শিশু-কিশোর মেলার উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, “আজ যে বা যারাই হোক, কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয়কে অস্বীকার করতে চায় এবং মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তাদের ইতিহাসের পাতায় ফিরে তাকানো উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “গত বছর স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তা দিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা মুছে ফেলা যাবে না—এটি চিরন্তন সত্য। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি বিভক্ত বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ ও বিভাজনমুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন। সে কারণেই তিনি সব রাজনৈতিক দলকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছিলেন।”
মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্টা ভুল উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ নিজেদের অপকর্মকে বৈধতা দিতে মুক্তিযুদ্ধকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। কিন্তু তাই বলে কি বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি? ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কি গণহত্যা চালায়নি? আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনীর অস্তিত্ব কি অস্বীকার করা যায়? ইতিহাসের প্রমাণ আজও বিদ্যমান। বাংলাদেশের মানুষ এসব ভালোভাবেই জানে।”
তিনি বলেন, “যারা পচা গলা রাজনীতির কথা বলে রাজনীতি করছে, তারা নিজেরাই ভণ্ড ও নৈতিকতাহীন রাজনীতির ধারক। বাংলাদেশের মানুষ এই রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। শিশুদের বিভ্রান্ত করে, ইতিহাস বিকৃত করে যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের জবাব জনগণ আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।”
ইশরাক হোসেন আরও বলেন, “এই চিরন্তন সত্যকে অস্বীকার করে যারা রাজনীতি করতে চায়, তারা কেন আবার দেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিতে চায়? মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে ১৯৭১ সালের ভুল আড়াল করার অপচেষ্টা দেশের মানুষ মেনে নেবে না।”
ভারতের কাছে নয়, পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের কাছেই আত্মসমর্পণ করেছিল-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইতিহাস বিকৃত করে রাজনীতি করার চেষ্টা করলে জনগণ তা কখনোই গ্রহণ করবে না। অতীতেও আমরা দেখেছি এক ব্যক্তি বা একটি দলের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। এখন আবার কেউ মুক্তিযুদ্ধকেই অস্বীকার করতে চায়। এই অপতথ্য বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কে এস হোসেন টমাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ারী থানা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, কাজী আবুল বাসার, জাহাঙ্গীর শিকদার, ওয়ারী থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রহিম ভূঁইয়া, জাসাস নেতা শিবা শানু, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মনা এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদ।
