শীতের কুয়াশা, শুষ্ক বাতাস আর ঠান্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই নাজেহাল হয়ে পড়েন। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, শরীর দুর্বল লাগে, হজমের সমস্যা বাড়ে-সব মিলিয়ে সকালটা যেন জমেই উঠতে চায় না। তবে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, চাইলে দিনের শুরুতে মাত্র ২-৩টি কিশমিশই বদলে দিতে পারে পুরো দিনের অনুভূতি। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই শুকনো ফলটিকে অনেকে ‘স্বর্গীয় ফল’ বলেও থাকেন।
সূর্যালোকে শুকিয়ে তৈরি হওয়া কালো, সোনালি বা বাদামি কিশমিশ শরীরকে দ্রুত শক্তি জোগানোর পাশাপাশি রক্তে শর্করা বাড়ায় না। এতে রয়েছে লৌহ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আঁশ, ভিটামিন বি ও সি-যা শীতের নানা অসুস্থতা কমাতে কার্যকর।
নীচে তুলে ধরা হলো খালি পেটে কিশমিশ খাওয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা-
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
প্রাকৃতিক শর্করায় সমৃদ্ধ কিশমিশ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এতে বাড়তি ক্যালরি না বাড়িয়েই ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. রক্তস্বল্পতা দূর করে
লৌহ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ কিশমিশ রক্তস্বল্পতা কমাতে কার্যকর। এছাড়া এতে থাকা কপার লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
৩. হজমের সমস্যা কমায়
কিশমিশ আঁশসমৃদ্ধ একটি প্রাকৃতিক রেচক। বিশেষ করে ভিজিয়ে খেলে এটি হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে
পটাশিয়ামসমৃদ্ধ কিশমিশ শরীরের লবণাক্ততার ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং রক্তনালির জৈব রসায়নে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
৫. হাড় শক্ত করে
কিশমিশে রয়েছে বোরন, ক্যালসিয়াম ও প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট—যা হাড় মজবুত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন কিশমিশ মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে।
৭. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
ভিটামিন বি ও সি সমৃদ্ধ এই শুকনো ফলটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ ও জ্বরসহ মৌসুমী রোগের ঝুঁকি কমায়।
৮. দ্রুত শক্তি জোগায়
কিশমিশের প্রাকৃতিক গ্লুকোজ শরীরে দ্রুত কর্মশক্তি যোগায়। সকালে কয়েকটি কিশমিশ খেলে সারাদিন দুর্বলভাব কম থাকে।
৯. অন্ধত্ব ও কোলেস্টেরল প্রতিরোধে সহায়ক
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ কিশমিশ চোখের সুরক্ষা দেয় এবং অন্ধত্বের ঝুঁকি কমায়। এর দ্রবণীয় আঁশ লিভার থেকে কোলেস্টেরল দূর করতেও কার্যকর।
১০. অনিদ্রা দূর করে
আয়রনসমৃদ্ধ কিশমিশ ঘুমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত খালি পেটে ২টি করে কিশমিশ খেলে অনিদ্রা কমে যেতে পারে।
শীতকালে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহজ ও কার্যকর সমাধান হতে পারে প্রতিদিন সকালে কয়েকটি কিশমিশ খাওয়া। তবে ডায়াবেটিস বা বিশেষ কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই উচিত।
