অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে বেশিক্ষণ ফোন ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘসময় মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রাখা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও প্রযুক্তি-বিশ্লেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন ব্যবহার এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কাজ, বিনোদন, সামাজিক যোগাযোগ-সব মিলিয়ে স্ক্রিন টাইম বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। এর ফলে শারীরিক ও মানসিক-উভয় দিকেই ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

১.চোখে চাপ ও দৃষ্টিশক্তি ঝুঁকি

চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘসময় মোবাইল দেখলে চোখে শুষ্কতা, জ্বালা, ঝাপসা দেখা এবং মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এক বিশেষজ্ঞ বলেন, “অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহারে ডিজিটাল আই স্ট্রেইন দ্রুত বাড়ছে। কম বয়সীদের ক্ষেত্রেও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।”

২.ঘাড় ও মেরুদণ্ডে ব্যথা

ফোনে মাথা নিচু করে তাকানো অবস্থায় যে চাপ তৈরি হয় তাকে বলা হয় ‘টেক্সট নেক’। এতে ঘাড়, কাঁধ ও মেরুদণ্ডে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা দেখা দিতে পারে। ফিজিওথেরাপিস্টদের মতে, এই সমস্যা তরুণদের মধ্যেই এখন বেশি দেখা যাচ্ছে।

৩.ঘুমের ব্যাঘাত

রাতে ঘুমানোর আগে ফোন হাতে নেওয়ার অভ্যাস ঘুমের চক্র নষ্ট করে। স্ক্রিনের নীল আলো মস্তিষ্ককে জাগ্রত রাখে, ফলে ঘুম আসতে দেরি হয় এবং ঘুমের মান কমে যায়।

৪.মানসিক চাপ ও আসক্তি

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারে উদ্বেগ, বিষণ্নতা, মনোযোগ কমে যাওয়া এবং একধরনের ডিজিটাল আসক্তির ঝুঁকি তৈর হয়। অনবরত নোটিফিকেশন ও অনলাইন উপস্থিতি বজায় রাখার চাপ মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৫.শিশু-কিশোররা বেশি ঝুঁকিতে

বিশেষজ্ঞরা জানান, যাদের বয়স কম, তাদের মস্তিষ্কের বিকাশে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম বাধা সৃষ্টি করতে পারে। শেখা, ভাষা বিকাশ এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কী করলে ঝুঁকি কমবে?

-প্রতিঘণ্টায় স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে ২০ সেকেন্ড দূরে তাকানো
-ফোন ব্যবহার সীমিত করতে স্ক্রিন টাইম কন্ট্রোল ব্যবহার
-ঘুমানোর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে ফোন বন্ধ রাখা
-কাজ ও বিনোদনের সময় আলাদা রাখা
-শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের বেশি ফোন ব্যবহার না করতে দেওয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোন সুবিধা এনে দিলেও এর ব্যবহারে সচেতন না হলে শারীরিক-মানসিক ক্ষতি বাড়তে পারে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহারই হতে পারে একমাত্র সমাধান।

Read Previous

বিপিএলের নিলাম থেকে বিজয়সহ বাদ পড়লেন যেসব ক্রিকেটার

Read Next

কারাগারে বেগম জিয়াকে ‘স্লো পয়জন’ দেওয়া হয়: মির্জা আব্বাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Most Popular